রাষ্ট্রশাসন
পরিচালনার জন্য ইংরেজ সিভিলিয়ানদের এদেশের ভাষাশিক্ষা করা একান্তভাবেই প্রয়োজন
ছিল।কম্পানি এই উদ্দেশ্যে কলকাতায় একটি কলেজ স্থাপন করলো ১৮০০খ্রীঃ ৪ঠা মে।এই
কলেজটি হল ফোট উইলিয়ম-কলেজ ।এই কলেজ থেকেই ঊনিশ শতকের বাংলা গদ্যে নবযুগের
সূত্রপাত হয়।তাই বাংলা গদ্যের গঠন পর্বে এই কলেজের ভূমিকা তাৎপর্যপূর্ণ ।
বস্তুত বিদেশীদের যোগ্য পাঠ্যপুস্তক
রচনার প্রয়োজন থেকে বাংলা গদ্য লেখার প্রয়াস সূচিত হল-
উইলিয়ম কেরী ঃ-ফোট উইলিয়ম-কলেজ গোষ্ঠিদের
মধ্যে কেরী অন্যতম।কেরী
বাংলা গদ্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন বাইবেলের অনুবাদ প্রসঙ্গে।তার রচিত দুটি
গ্রন্থের নাম
১)কথপোকথন
-১৮০১
২)ইতিহাসমালা-১৮১২
এই গ্রন্থগুলি সংকলিত হয়েছে ইংরেজদের এদেশের কথ্য ভাষার সাথে পরিচিত করার জন্য।
রামরাম বসু ঃ- ইনি ফারসি ও
সংস্কৃত ভাষায় পণ্ডিত ছিলেন। তাঁর দুটি গ্রন্থ হল-
১)রাজা
প্রতাপাদিত্য চরিত্র -১৮০১
২)লিপিমালা-১৮০২
এই গ্রন্থগুলি সংকলিত হয়েছে ইংরেজদের এদেশের কথ্য ভাষার সাথে পরিচিত করার জন্য।
মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার ঃ-তার লেখা
সুখ্যাত গ্রন্থগুলি হল-
১)বত্রিশ সিংহাসন-১৮০২
২)হিতোপদেশ-১৮০৮
৩)রাজাবলী-১৮০৮
৪)বেদান্তচন্দ্রিকা -১৮১৭
৫)প্রবোধচন্দ্রিকা-১৮৩৬
উপরিউক্ত রচনাগুলিতে তৎসম শব্দ ও
কথ্য ভাষার নমুনা পাওয়া যায়।
অন্যান্য গদ্যাকার ঃ- অন্যান্য গদ্যাকারদের নাম ও গ্রন্থের নাম নিম্নে
দেওয়া হল –
১)হিতোপদেশ-১৮০২-গোলকনাথ
শর্মা ।
২)ওরিয়েনন্টাল ফেবুলিষ্ট-১৮০৩-তারিণীচরণ মিত্র ।
৩)তোতা ইতিহাস-১৮০৫-চন্ডীচরণ মুনসী ।
৪)হিতোপদেশ-১৮০৮-রামকিশোর তর্কচূড়ামণি ।
সবশেষে আমরা বলতে পারি বাংলা গদ্যের
বিকাশে ফোট উইলিয়ম-কলেজের ভূমিকা বহুতল গৃহের ভিত্তি স্থাপনের মত গুরুত্বপূর্ণ।
No comments:
Post a Comment