Tuesday 16 May 2017


কুসংস্কার একটি ব্যাধি (মহুয়া মন্ডল রোল - 26)





কুসংস্কার একটি ব্যাধি। এটি সামাজিক ও মানসিক দুই হতে পারে বলে আমার ধারনা। যুগ যুগ ধরে চলে আসা সামাজিক ভাবে প্রচলিত অনেক কুসংস্কার রয়েছে যা আমরা শিক্ষিত সমাজও দূরে ঠেলে দিতে পারছিনা একমাত্র মানসিক দন্ধ বা দ্বিধা থেকেই। ভ্রান্ত বিশ্বাস-সংস্কারের মধ্যে কোন প্রামাণিক ভিত্তি নেই । কুসংস্কার বা ভুল বিশ্বাসগুলো ছাড়া প্রচলিত বিশ্বাসের সবচেয়ে ক্ষতিকর উপাদান হচ্ছে ‘অন্ধ বিশ্বাস’~ এবং অন্ধবিশ্বাস থেকেই কুসংস্কারের উৎপত্তি। বিংশ শতাব্দীর শেষ দশকে আজ যখন মানুষ মঙ্গলে পাড়ি জমানোর আয়োজন করছে, মহাশূন্যে বসতি স্থাপনের তোড়জোড় করছে বিভিন্ন মরণ ব্যাধির বিরুদ্ধে তার অস্ত্রকে করে তুলেছে আরো শাণিত, মাতৃগর্ভের বাইরে সন্তান ধারণের চিন্তা করছে ঠিক সে সময়ে আমাদের দেশের এক বিরাট জনগোষ্ঠী মনে করে মানুষের চাঁদে যাবার ঘটনা ভিত্তিহীন তাদের ইমান নষ্ট করার পশ্চিমা ষড়যন্ত্র, ভূমিকম্পের সময় আজান দিলে ক্ষয়ক্ষতি হবে কম, ‘শেতলা দেবী’র পূজা দিলে বন্ধ হবে কলেরা~হরলিকস খেলে না কি ছেলে মেয়েরা ‘লম্বা-শক্তিশালী-বুদ্ধিমান’ হয়ে যায়। ডেটল সাবান না কি ৯৯% জীবাণু মেরে ফেলে । ফেয়ার-এন্ড-লাভলী (অথবা ফেয়ার-এন্ড-হ্যান্ডসাম) নাকি গায়ের রঙ ফর্সা করতে পারে । আধুনিক কুসংস্কার । এদেরকে বলা হয় অপবিজ্ঞান । সাধারণ মানুষের মধ্যে বিজ্ঞানের একটি ইতিবাচক প্রভাব আছে । তাই বিজ্ঞানের মুখোশ নিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা অত্যন্ত সহজ । নানা রকম মানুষের নানা রকম সংস্কার আছে । কোন কোন সংস্কারকে আমরা কুসংস্কার বলি, কোন কোনটাকে ভালো মন্দ কিছুই না বলে প্রশ্রয়ের দৃষ্টিতে দেখি । যেমন অনেকে ১৩ সংখ্যাটিকে এড়িয়ে চলেন । আনলাকি থার্টিন বেশ প্রচলিত একটি সংস্কার।আমাদের দেশে লোডশেডিং-এ যত মোমবাতি জ্বলে তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে মোমবাতি জ্বলে মন্দির মসজিদ গির্জা প্যাগোড়া ফকির দরবেশ আউলিয়াদের মাজারে । এই মানত করা মোমবাতির আলোতে মনের কুসংস্কারের অন্ধকার আরো গাঢ় হয়, আমরা এগিয়ে চলি অন্ধকারের দিকে। আরও অনেক কিছু বলা যেতে পারে কুসংস্কার নিয়ে। শিক্ষিত হলেই হবেনা সাথে মানসিক চিন্তাভবনারও পরিবর্তন ও প্রসার ঘটাতে পারলেই কুসংস্কার দূর করা সম্ভব। কারণ অনেক কুসংস্কার যেহেতু সামাজিক ভাবে উৎপন্ন যা যুগ যুগ ধরে প্রবাহমান আত আমাদের পরিবার ও শিক্ষার মাধমেই মনের মধ্যে গভীর রেখা ফেলে। তাই আগে শিক্ষার পাশাপাশি মানসিক পরিবর্তনের পক্ষপাতী আমি। ধন্যবাদ

No comments:

Post a Comment