Tuesday 16 May 2017

প্রফেসর শঙ্কু (সায়ন্তী দাশ . রোল -৯৫)

    “প্রফেসর শঙ্কু” এই নামটা শুনলে সাহিত্যপ্রেমী বাঙালী মানসে নানা রকমের ভালোলাগার একটা মিশ্রণ হয়ত অজান্তেই ফুটে ওঠে। এই মিশ্রণের উপাদান কতকটা শঙ্কুর স্রষ্টা ক্ষণজন্মা এক বহুমুখী এক প্রতিভাবান পুরুষ
শ্রেষ্ঠের প্রতি অবচেতন শ্রদ্ধা, কতকটা শৈশব-কৈশোরের সোনালী দিন গুলোকে মনে পড়ানো মধুর আবেশ, কতকটা আবার বিজ্ঞানাঙ্গিক ফ্যান্টাসি ও এডভেঞ্চারের সমুদ্রে গা ডোবানোর আনন্দ। ছেলেবেলায় ত বটেই, বড় হয়েও এবং বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চশিক্ষিত হয়েও শঙ্কু পড়তে বসে কোনোদিন তার বৈজ্ঞানিক প্রাসঙ্গিকতা বা তাতে অপ-বিজ্ঞান বা অবিজ্ঞানের মাত্রা নিয়ে কোন ভাবনা আমার আসে নি। প্রথম থেকেই ধরে নেওয়া যে শঙ্কুতে বর্ণীত বিজ্ঞান বা ক্ষেত্র বিশেষে অতিপ্রাকৃত ঘটনার সমাহার নেহাতই পাঠকের মনোরঞ্জনের উদ্দেশ্যে। সত্যজিৎ বাবু হয়ত সচেতন ভাবেই বড়দের জগতের জটিলতা বাদ দিয়ে কল্পনার আকাশে মনের ঘুড়িটি ভাসিয়ে দিতে যাতে পাঠকের কোন পিছুটান অনুভব না করতে হয় তার ব্যবস্থা করে রেখে গেছেন। তা বলে তিনি বাস্তব-বিমুখ নন। তার সিনেমার প্রধান বৈশিষ্ট্য যে রিয়ালিসম, তার ছাপ তার লেখা গল্প ও উপন্যাসের ভাষ্যে (একদম খাঁটি রূপকথা ধর্মী লেখা, যেমন “সুজন ও হরবোলা” বাদে) সুস্পষ্ট। এই রিয়ালিসম ও বিজ্ঞানের ভাষ্যে বলা ফ্যান্টাসির গুনেই শঙ্কু কাহিনী বাঙলা সাহিত্যে আর সবার চেয়ে আলাদা জায়গা করে নিয়েছে।
    কিন্তু বাঙালী চিন্তাশীল। সাহিত্য ও কলার ক্ষেত্রে প্রত্যেকটা বিষয়ই কোন না কোন সময়ে বাঙালীর ব্যাবচ্ছেদের টেবিলে উঠেছে। কাজেই প্রফেসর শঙ্কু ও তার স্রষ্টা সত্যজিৎ কেন পার পাবে? সুতরাং উঠে এসেছে নানান তর্ক ও বিতর্ক। “শঙ্কু কল্পবিজ্ঞান হিসেবে কতটা দুর্বল? (যদিও সত্যজিৎ বাবু কোনোদিন দাবি করেন নি শঙ্কু কল্পবিজ্ঞান।) শঙ্কুতে অপ-বিজ্ঞানের এত বাড়বাড়ন্ত কেন? সত্যজিৎ রায় কি কল্পবিজ্ঞান লেখার যোগ্য ছিলেন? তিনি ত অর্থনীতি ও আর্টের ছাত্র! তিনি বিজ্ঞান বুঝতেন না বলেই গল্পে এমন আজগুবি ঘটনা ঘটিয়েছেন!” – এই সব আলোচনা ও প্রশ্ন নিয়ে বাঙালী ঝড় তুলেছে কফি-হাউসের টেবিলে।
    আজ ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কু পিতৃহীন। জন্মদাতা পিতা ও স্রষ্টা পিতা কেউই আর ইহজগতে নেই। তাই জীবন সায়াহ্নে এসে তিনি একটি শেষ ডাইরি লিখছেন। বয়সের দোষে এই ডাইরিতে ফিরে ফিরে আসছে তার জীবনের স্মৃতিরোমন্থন। তার স্রষ্টাই শুধু নয়, তাঁর ঘনিষ্ঠ মানুষ গুলোও আজ ক্রমশ তার জীবন থেকে মুছে যাচ্ছে। তার মেধার তেজ ও আজ অনেকটা স্তিমিত। তাই তার শেষ ডাইরি তে। মানুষ মাত্রেই যে ভুল হয় ও ত্রিলোকেশ্বরও নামে দেবতা হলেও আসলে পঞ্চভূতে (থুড়ি, অরগ্যানিক ও ইনরগ্যানিক কিছু মলিকিউলে) গড়া মানুষ তা এই ডাইরি তে তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন।
    কিন্তু তার স্রষ্টাতুতো ভাই প্রদোষ চন্দ্র মিত্র ও তার চিরহরিৎ জ্যাঠা সিদ্ধেস্বরের মগজাস্ত্র ত আজো ক্ষুরধার। তারা এত সহজে মেনে নেবেন কেন? জীবনে প্রথমবার সিদ্ধেস্বর জ্যাঠা তাই কলম তুলে নিয়েছেন। (নিন্দুকেরা দেখুন হোমসের কুঁড়ে হুমদো মাইক্রফ্ট্ কোনদিন লিখবে প্রফেসর চ্যালেঞ্জারের হয়ে?) লিখেছেন এক দীর্ঘ সওয়াল। তার ভাইপো ফেলু যেখান থেকেই এই ডাইরি পেয়ে থাকুক, এই অমূল্য ডাইরি পরে ত আর চুপ থাকা যায় না। তবে হ্যাঁ, সিধু জ্যাঠা একটু গোলমাল করেছেন। আসলে ওনার জ্ঞান ভাণ্ডার এতোই প্রসারিত, যে ক্ষেত্র বিশেষে তা তার লেখায় একটু বেশি ব্যাবহার করে ফেলেছেন.

1 comment:

  1. The Casino Site | 2021 Guide to Play Live Roulette | LuckyClub
    The Casino Site is run by luckyclub the Lucky Club and is a live dealer casino located in the heart of downtown Vegas. The casino is open daily from

    ReplyDelete