ধনী ও দরিদ্র কে ভাগ করে ফেলেছে GLOBALIZATION (তন্দ্রিমা দাশ , রোল : ৪৯)
সম্প্রতি বিবিসি গ্লোবাল পোল সারা বিশ্বে
গ্লোবালাইজেশনের অগ্রগতির ফল নিয়ে জরিপ করেছে। ৩৪ দেশের অর্ধেক জনগণের মত, গ্লোবালাইজেশনের অগ্রতির হার খুব দ্রুত গতিতে হচ্ছে, যেখানে ৩৫% জনগণের মত গ্লোবাইলাইজেশনের অগ্রগতি খুব ধীর গতিতে চলছে।

এটা গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত যে, একদিকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফল সঠিকভাবে ভাগাভাগি না হয়েই বিশ্বের ধনীর দেশগুলোতে গ্লোবালাইজেশন শক্তিশালী ভূমিকা রাখছে।
বিশ্বের বেশিরভাগ দরিদ্র দেশগুলোর জনগণ মনে করে গ্লোবালাইজেশনের এগিয়ে যাওয়া খুব ধীর গতির, যেখানে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুবিধা এবং দায় সঠিকভাবে বন্টন হচ্ছে না।
এই জরিপের কো-স্পন্সর এবং ম্যারিল্যান্ড ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল পলিসি অ্যাটিচিউড প্রোগ্রামের স্টিভেড কুল বলেন, উন্নয়নশীল দেশের জনগণের মত, তাদের দেশের অন্যায়-অবিচারগুলো ভাঙতে গ্লোবালাইজেশনের ভূমিকা শক্তিশালী। ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল, কেনিয়া এবং ম্যাক্সিকোতে গ্লোবালাইজেশন এবং অর্থনৈতিক উন্নতির ফলে সঠিক বিভাজন খুবই শক্তিশালী।
জরিপকৃত ৩৪টি দেশের মধ্যে ২৭টি দেশের ৬৪% জনগণ বিশ্বাস করে, অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুবিধা সঠিকভাবে বিভাজিত হচ্ছে না। চীন হচ্ছে একটি ব্যতিক্রম দৃষ্টান্ত যারা শেষ ১০ বছরে ১০% বার্ষিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে।
জরিপে পাওয়া গেছে, চীনের নগরবাসীরা বলছে, তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সঠিকভাবে ডিস্ট্রিবিউট করা হচ্ছে। এমনকি অর্থনীতিবিদেরাও বলছে, চীনের নগর এবং গ্রামের ব্যবধান দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে।
কিন্তু চায়নিজরা গ্লোবালইজেশনের অগ্রগতির ব্যাপারে প্রখর দৃষ্টি দিচ্ছে, যা সাংহাইয়ের ফিজিক্যাল এবং সোস্যাল ল্যান্ডস্ক্যাপে নাটকীয়ভাবে বদলের চিত্রে প্রকাশ পায়। কিছু নতুন বাজার সম্পন্ন দেশের ক্ষেত্রে গ্লোবালাইজেশন অর্থনীতির চেয়ে অনেক বেশি সামাজিক দিককে কেন্দ্র করে এগুচ্ছে।
একই প্যাটার্ন অ্যাপ্লাই করা হয়েছে ভারতের ডিজিটাল নগরী ব্যাঙ্গালোরে। বিশ্বের ধনী দেশগুলোর অর্থনৈতিক অবনতি দৃষ্টিগোচর হচ্ছে, আরো দেখা যাচ্ছে বিশ্বের শেয়ার বাজার নিম্নমুখী। এ অবস্থা ছিল এ সার্ভের পূর্বে। ইউনাইটেড স্টেটের ২২% নাগরিক মনে করে অর্থনীতির এ ধরনের পরিস্থিতি ভালো অবস্থান সৃষ্টি করবে তাদের দেশের জন্য, অপরদিকে ৭৮% এর উল্টোটা মনে করে। ফ্রান্স, ইতালি এবং জাপানের নাগরিকরা সমানভাবে হতাশাগ্রস্ত। তবে, ফ্রান্সের ২২% এবং জাপানের ৩৩% নাগরিক মনে করে এ অবস্থার উন্নতি ঘটবে।
অন্যদিকে এ অবস্থার ঠিক উল্টোটা ঘটেছে চীন, রাশিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং ইউএইতে। এ দেশগুলো অর্থনৈতিক উন্নতির ফল পাচ্ছে তেল এবং মিনারেল পণ্যের দাম বাড়ার ফল এ ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।
যে বিষয়টা এর মধ্যে নাড়া দিচ্ছে তা হলো ওয়েস্টার্ন ইউরোপীয়ান দেশগুলোর সামাজিক মডেল উন্নয়নে গ্লোবালাইজেশন শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছে। ইউএস এবং উইকে’র উন্নতি খুবই ধীর গতির হয়ে গেছে এবং বৈষম্য বাড়ছে খুব দ্রুত। বিবিসি’র জরিপ কাজে সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোব স্ক্যানের পরিচালক ডগ মিলার বলেন, অর্থনৈতিক দিক নির্দেশনার ক্ষেত্রে জনগণের সরাসরি ইনভলভমেন্ট রয়েছে। তাছাড়া গ্লোবালাইজেশনের অগ্রগতি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফল এবং দায়ভার দুটোরই বিভাজন হওয়া প্রয়োজন।
এ জরিপের সূত্রে গ্লোব স্ক্যান আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চিলি, চীন, কোস্টারিকা, মিশর এল সালভেডর, ফ্রান্স, ঘানা, জার্মান, গ্রেট ব্রিটেন, গুয়েতেমালা, হোন্ডুরাস, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইজরায়েল, ইতালি, জাপান, কেনিয়া, লেবানন, ম্যাক্সিকো, নিকারাগুয়া, নাইজেরিয়া, পানামা, ফিলিপাইন, পর্তুগাল, রাশিয়া, সাউথ কোরিয়া, স্পেন, তুর্কি, ইউএই এবং ইউএসের ৩৪,৫২৮ জন লোকের সাক্ষাতকার গ্রহণ করেছে।